Header Ads

Header ADS

প্রশ্ন : ডাটা কমিউনিকেশন মাধ্যম বলতে কী বোঝো?

উত্তর : প্রেরণ প্রান্ত ও দূরবর্তী গ্রহণ প্রান্তের মধ্যে ডাটা আদান-প্রদানের জন্য প্রয়োজন উভয় প্রান্তের মধ্যে সংযোগ। এই সংযোগকে সাধারণত চ্যানেল বলা হয়। এই চ্যানেল বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন প্রকার মাধ্যম ব্যবহার করা হয়। ডাটা চলাচলের এই মাধ্যমগুলোকেই কমিউনিকেশন মাধ্যম বলা হয়।
ডাটা কমিউনিকেশন মাধ্যম দুই ধরনের হয়। যথা :
১।  তার মাধ্যম : কেবল বা তার, সাধারণ টেলিফোন, ফাইবার অপটিক লাইন ইত্যাদি।
২।  তারবিহীন মাধ্যম : বেতার তরঙ্গ, মাইক্রোওয়েভ, ইনফ্রারেড, স্যাটেলাইট ইত্যাদি।
 
প্রশ্ন : টুইস্টেড পেয়ার কেবল সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর : টুইস্টেড পেয়ার কেবল (Twisted Pair Cable)
টুইস্টেড পেয়ার বহুল ব্যবহৃত এবং একটি পুরনো ট্রান্সমিশন মাধ্যম। টুইস্টেড পেয়ার প্রায় ১সস চওড়া দুটি অপরিবাহী (insulated) কপার তার  দ্বারা গঠিত। তার দুটি এমনভাবে পেঁচানো থাকে, যা দেখতে উঘঅ অণুর মতো। তার দুটিকে পেঁচানো হয়, কারণ দুটি সমান্তরাল তার একটি ভরহব antenna গঠন করে। তার দুটি পেঁচানোর কারণে একটি তার আরেকটি তারের তরঙ্গকে বাতিল করে, ফলে তারগুলো কম বিকিরণ করে। 
  
  চিত্র : টুইস্টেড পেয়ার কেবল
টুইস্টেড পেয়ার টেলিফোন সিস্টেমে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। নিকটবর্তী সব টেলিফোন টুইস্টেড পেয়ার তার দ্বারা সংযুক্ত থাকে। টুইস্টেড পেয়ার amplification ছাড়াই কয়েক কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত ডাটা ট্রান্সমিট করতে পারে; কিন্তু বেশি দূরত্ব পর্যন্ত ডাটা ট্রান্সমিট করতে চাইলে রিপিটারের প্রয়োজন হয়। অ্যানালগ অথবা ডিজিটাল উভয় ধরনের ডাটা ট্রান্সমিশনে টুইস্টেড পেয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। টুইস্টেড পেয়ারের ব্যান্ডউইডথ তারের thickness এবং অতিক্রান্ত দূরত্বের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত টুইস্টেড পেয়ার কেবলের ব্যান্ডউইডথ মেগাবিট/সে. হয়ে থাকে। কম মূল্য ও ভালো performance-এর জন্য টুইস্টেড পেয়ার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
 
টুইস্টেড পেয়ার কেবলের সুবিধা

    ► অ্যানালগ অথবা ডিজিটাল উভয় ধরনের ডাটা ট্রান্সমিশনে এ কেবল ব্যবহৃত হয়।
     ► কম দূরত্বে ডাটা প্রেরণের জন্য এটি সর্বাপেক্ষা কম ব্যয়বহুল পদ্ধতি।
     ► টেলিফোন সিস্টেমে ব্যবহৃত টুইস্টেড পেয়ার কেবলের মধ্য দিয়ে সিগন্যাল কোনো রকম পরিবর্তন ছাড়াই বেশ কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত     যেতে পারে।
    ► সহজেই স্থাপন করা যায়।
 
টুইস্টেড পেয়ার কেবলের অসুবিধা
    ►   নয়েজ সিগন্যাল দ্বারা সহজে প্রভাবিত হওয়ার কারণে যোগাযোগ দূরত্ব বেশি হলে ভুলের মাত্রা বেড়ে যায়।
    ►   গঠন পাতলা হওয়ার কারণে সহজেই ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
   ►   ট্রান্সমিশন লস অপেক্ষাকৃত বেশি।
 
প্রশ্ন : কো-অ্যাক্সিয়াল কেবল সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর : কো-অ্যাক্সিয়াল কেবল (Co-axial cable)
কো-অ্যাক্সিয়াল কেবল টুইস্টেড পেয়ার কেবলের তুলনায় ভালো shielding করা থাকে, যাতে অনেক দূরত্ব পর্যন্ত অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ডাটা ট্রান্সমিট করতে পারে। দুই ধরনের কো-অ্যাক্সিয়াল কেবল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। একটি ৫০ ওহম কেবল, যা প্রথম দিকে ডিজিটাল ট্রান্সমিশনে ব্যবহৃত হতো। অন্যটি ৭৫ ওহম, যা অ্যানালগ ট্রান্সমিশনে এবং কেবল টেলিভিশনে বেশি ব্যবহৃত হতো। কিন্তু এটি অধিকতর গুরুত্ব পায় যখন কেবলের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া শুরু হয়।
       চিত্র : কো-অ্যাক্সিয়াল কেবলের গঠন
কো-অ্যাক্সিয়াল কেবলের কোর অনমনীয় তামার তার দ্বারা তৈরি, যার চারদিকে অপরিবাহী (insulator) পদার্থ দ্বারা আবৃত থাকে। insulator আবার সিলিন্ডার আকৃতির পরিবাহী তার দ্বারা বেষ্টিত থাকে। এই আবরণের ওপরে তামার তারের জাল বিছানো থাকে। সবার ওপরে থাকে প্লাস্টিকের আবরণ, যা তারকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে।
কো-অ্যাক্সিয়াল কেবলের গঠন এবং shielding উচ্চ ব্যান্ডউইডথ প্রদান করে এবং noise থেকে রেহাই দেয়। এই কেবলের ব্যান্ডউইডথ সাধারণত ১ঐু (গিগাহার্জ) হয়ে থাকে। কো-অ্যাক্সিয়াল কেবল ষড়হম distance টেলিফোন লাইনে এবং Metropoliton area নেটওয়ার্কে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

কো-অ্যাক্সিয়াল কেবলের বৈশিষ্ট্য
      ► ডাটা ট্রান্সফার রেট ১০ গঢ়নং পর্যন্ত হয়ে থাকে।
     ► ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ইমেজিং বা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি প্রভাব থেকে মুক্ত।
      ► অধিক নিরাপদ।
      ► নির্ভরযোগ্যতা বেশি।
      ► দামে কম।
      ► সহজে স্থাপন করা যায়।
      ► অনেক দূরত্ব পর্যন্ত নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করা যায়।
 
প্রশ্ন : অপটিক্যাল ফাইবার কী? অপটিক্যাল ফাইবারের গঠন ও বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর : অপটিক্যাল ফাইবার হলো কাচ (glass) অথবা প্লাস্টিক (plastic) দ্বারা তৈরি এমন একটি আবদ্ধ মাধ্যম, যার মধ্যে দিয়ে আলোকে অনেক দূর পর্যন্ত পরিবহন করা যায়। অপটিক্যাল ফাইবারের মধ্য দিয়ে আলো পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের নিয়মানুযায়ী প্রবাহিত হয়। শব্দ শক্তি অথবা অন্য কোনো বৈদ্যুতিক শক্তিকে আলোকশক্তিতে রূপান্ত্তর করার পর তা অপটিক্যাল ফাইবারের মধ্য দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ফলে আলোর গতিতে ডাটা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যায়।

অপটিক্যাল ফাইবারের গঠন
অপটিক্যাল ফাইবার  প্রধান তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। যেমন—
১। কোর (Core)
২। ক্ল্যাডিং (Cladding)
৩। জ্যাকেট (Jacket)
কোর (Core)
সবচেয়ে ভেতরের অংশ হচ্ছে কোর, যা কাচ বা প্লাস্টিক দ্বারা তৈরি। প্রশস্ত ব্যাসবিশিষ্ট কোরকে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের ওপর নির্ভর করে অবরুদ্ধ করা হয়। অপরদিকে কম ব্যাসবিশিষ্ট কোর ফাইবার (বেশির ভাগ ২০০ মিটারের বেশি দূরত্ব পর্যন্ত কমিউনিকেশন লিংক হিসেবে ব্যবহৃত হয়) সীমা বা প্রাচীর ওয়েবগাইড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। কোরের ব্যাস ৮ থেকে ১০০ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ক্ল্যাডিং (Cladding)
কাচ বা প্লাস্টিক দ্বারা তৈরি এক বিশেষ ধরনের আবরণ, যার Refractive index কোরের Refractive index থেকে কম। 

জ্যাকেট (Jacket)
প্লাস্টিক এবং বিভিন্ন ধাতব দ্বারা তৈরি সবচেয়ে বাইরের আবরণ, যা ফাইবারকে জলীয়বাষ্প, ঘর্ষণ ও চাপজনিত আঘাত থেকে রক্ষা করে।

অপটিক্যাল ফাইবারের বৈশিষ্ট্য
১।    অত্যধিক উচ্চ গতিতে ডাটা ট্রান্সমিট করতে পারে।
২।    একসঙ্গে অনেক ডাটা যেতে পারে।
৩।    ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালের পরিবর্তে আলোক সিগন্যাল ট্রান্সমিট করে।
৪।    রাসায়নিক নিষ্ক্রয়তা।
৫।    অতি স্বচ্ছতা।
৬।    সহজ প্রক্রিয়াকরণ।
৭।    শক্তির অপচয় রোধ।
৮।    আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন পদ্ধতিতে ডাটা ট্রান্সমিট করে।
৯।    নেটওয়ার্ক ব্যাকবোন হিসেবে অধিক ব্যবহৃত হয়।

অপটিক্যাল ফাইবারের সুবিধা
১।    আয়তনে ছোট।
২।    ওজনে হালকা।
৩।    সহজে পরিবহনযোগ্য।
৪।    সহজ প্রক্রিয়াকরণ করা যায়।
৫।    শক্তির অপচয় কম।
৬।    বিদ্যুৎ চৌম্বক প্রভাব হতে মুক্ত।
৭।    ডাটা আদান-প্রদান নিরাপদ ও গোপনীয়।
৮।    ডাটা আদান-প্রদান নির্ভুল।
৯।    পরিবেশের তাপ-চাপ ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত হয় না।
১০।   রিপিটারসমূহ অনেক দূরে দূরে স্থাপন করতে হয়।

অপটিক্যাল ফাইবারের অসুবিধা
১। U আকৃতিতে বাঁকানো যায় না।
২। দাম খুবই বেশি।
৩। স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ জটিলতা বেশি।
 
প্রশ্ন : অপটিক্যাল ফাইবারের প্রকারভেদ আলোচনা করো।
উত্তর : ফাইবারের গাঠনিক উপাদানের প্রতিসরাঙ্কের ওপর নির্ভর করে একে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা—
১। স্টেপ-ইনডেক্স ফাইবার (Step-index fiber)
২। গ্রেডেড-ইনডেক্স ফাইবার (Graded-index fiber)

স্টেপ-ইনডেক্স ফাইবার (Step-index fiber) : স্টেপ-ইনডেক্স ফাইবারের কোরের প্রতিসরাঙ্ক সর্বত্র সমান থাকে এবং ব্যাস বেশি।

গ্রেডেড-ইনডেক্স ফাইবার (Graded-index fiber) : গ্রেডেড-ইনডেক্স ফাইবারের কোরের প্রতিসরাঙ্ক কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি এবং ব্যাসার্ধ বরাবর কমতে থাকে। 

১। সিঙ্গেলমোড ফাইবার (Singlemode fiber)
২। মাল্টিমোড ফাইবার (Multimode fiber)

মাল্টিমোড ফাইবার (Multimode fiber) : মাল্টিমোড ফাইবারের কোরের ব্যাস ১০ মাইক্রোমিটার (১০ স)-এর বেশি হয়ে থাকে। স্টেপ-ইনডেক্স মাল্টিমোড ফাইবারের কোরের মধ্য দিয়ে আলোকরশ্মি পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের নিয়ম অনুযায়ী প্রবাহিত হয়। আলোকরশ্মি কোর-ক্ল্যাডিং তলে সংকট কোণের (critical angle) চেয়ে বেশি কোণে আপতিত হয় এবং সম্পূর্ণ প্রতিফলিত হয়। এর চেয়ে কম কোণে আপতিত হলে তা আলোকে বেশি দূর প্রবাহিত করে না, যার ফলে  তথ্য বেশি দূর পাঠানো সম্ভব হয় না।

সিঙ্গেলমোড ফাইবার (Singlemode fiber) : সিঙ্গেলমোড ফাইবারে একসঙ্গে কেবল একটি আলোক সংকেত প্রেরণের পথ থাকে এবং সাধারণত লেজার সিগন্যালিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। সিঙ্গেলমোড ফাইবারের কোরের ব্যাস সাধারণত ৮ থেকে ১২৫ মাইক্রোন হয়ে থাকে। কোনো রিপিটার ছাড়াই সিঙ্গেলমোড ফাইবার কেবলকে ৩ মাইল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়। 


No comments

অ্যাপল জিনিয়াস স্টিভ ওজনিয়াকের মজার সব গল্প

স্টিভ ওজনিয়াক, অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। তিনি ও স্টিভ জবস মিলে শূন্য থেকে গড়ে তুলেছিলেন আজকের টেক-জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটিকে। সম্প্রতি স...

Powered by Blogger.