Header Ads

Header ADS

সংখ্যাপদ্ধতি (Number System)



ভূমিকা :


সংখ্যাপদ্ধতি ও আন্তঃপদ্ধতি রূপান্তর প্রক্র‌িয়া সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের প্রাথমিক জ্ঞানের অন্তর্ভূক্ত বিষয়। এই বিষয়ে জ্ঞান লাভ না করলে ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের নানাবিধ গাণিতিক ও যৌক্তিক অপারেশন, কার্যপ্রক্র‌িয়া, নকশা প্রণয়নের কৌশল এবং উন্নয়ন কোন কিছুই সম্ভব নয়। তাই ইলেকট্রনিক্সের শিক্ষর্থীদের এই বিষয়ে জ্ঞানার্জন অতীব গুরুত্বপূর্ণ। 


সংখ্যাপদ্ধতি কি? 

সংখ্যাপদ্ধতি হলো কোন সংখ্যাকে উপস্থাপন করার জন্য নির্দিষ্ট লিখিত রূপ বা পদ্ধতি যাতে কিছু সংখ্যক নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রতীক ব্যবহার করা হয় এবং এই সকল প্রতীকসমূহ হতে সুনির্দিষ্ট নিয়মে সজ্জিত একগুচ্ছ প্রতীক যা একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা মান প্রকাশ করে। সংখ্যা প্রকাশের এরূপ নিয়ম, পদ্ধতি বা রীতিকে সংখ্যা পদ্ধতি বলা হয়। এক কথায়, কোন সংখ্যা প্রকাশের লিখিত পদ্ধতিকেই সংখ্যা পদ্ধতি বলা হয়ে থাকে। এই সকল সংখ্যা প্রতীকগুলোকে আমরা 'ডিজিট' বা বাংলা ভাষায় 'অংক' বলে জানি। সংখ্যা প্রকাশ করার ক্ষুদ্রতম প্রতীক হচ্ছে অংক। যেমন: 1, 2, 3 আলাদা তিনটি অংক, এই তিনটি অংককে একত্রে সাজিয়ে পাই 123 একশত তেইশ, যা একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা। আবার 1, 2 এবং 3 এদের প্রত্যেকের স্বতন্ত্র সাংখ্যিক মান আছে। এভাবে সংখ্যা পদ্ধতিতে বিভিন্ন অংককে নিয়ম মত সাজিয়ে বিভিন্ন সংখ্যা পাওয়া যায়। এ সকল সংখ্যাসমূহকে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ ইত্যাদি গাণিতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় গণনার কার্য সমাধান করা যায়।


অংক বা সংখ্যা প্রতীকের নিজস্ব মান: 

প্রত্যেক সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত অংকসমূহের অন্তর্গত প্রতিটি অংকের একটি করে নিজস্ব সংখ্যাগত মান রয়েছে। আবার এই সকল অংকসমূহ হতে একগুচ্ছ অংককে নিয়মানুযায়ী সাজিয়ে বিভিন্ন সংখ্যা তৈরী করা যায়। যেমনঃ ডেসিম্যাল বা দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট দশটি অংক রয়েছে, এরা হলো 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9 এদের নিজস্ব মান নিম্নরূপঃ

0 এর নিজস্ব মান শূন্য 

1 এর নিজস্ব মান এক

2 এর নিজস্ব মান দুই

3 এর নিজস্ব মান তিন

4 এর নিজস্ব মান চার

5 এর নিজস্ব মান পাঁচ

6 এর নিজস্ব মান ছয়

7 এর নিজস্ব মান সাত

8 এর নিজস্ব মান আট

9 এর নিজস্ব মান নয়

আবার এই সকল অংকসমূহ হতে একগুচ্ছ অংককে নিয়মানুযায়ী সাজিয়ে বিভিন্ন সংখ্যা তৈরী করা যায়। যেমনঃ 735 সংখ্যাটির মান সাতশত পঁয়ত্রিশ, 358 সংখ্যাটির মান তিনশত আটান্ন ইত্যাদি। 


সংখ্যাপদ্ধতির ভিত্তি (Radix or Base) : 

কোন সংখ্যাপদ্ধতির ভিত্তি হচ্ছে ঐ সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত অংকসমূহ বা প্রতীকসমূহের মোট সংখ্যা। যেমন: ডেসিম্যাল বা দশমিক পদ্ধতির ভিত্তি হচ্ছে 10, কারণ দশমিক সংখ্যাপদ্ধতিতে মোট দশটি অংক বা প্রতীক (0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9) রয়েছে। অনুরূপ বাইনারী সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি 2, কারণ বাইনারী সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট দুটি অংক বা প্রতীক (0, 1) রয়েছে। অকট্যাল সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি 8, কারণ অকট্যাল সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট আটটি অংক বা প্রতীক (0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7) রয়েছে। হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি 16, কারণ হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট ষোলটি অংক বা প্রতীক (0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, A, B, C, D, E, F) রয়েছে। 


অংক বা সংখ্যা প্রতীকের স্থানীয় মান : 

যেকোন সংখ্যার অন্তর্গত ডিজিট বা অংকসমূহের অবস্থানগত মানকে স্থানীয় মান বলা হয়। স্থানীয় মান’ সংখ্যাপদ্ধতির একটি বিশেষ রীতি/নিয়ম যার মাধ্যমে উচ্চতর সংখ্যাসমূহকে প্রকাশ করা যায়। ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতির ক্ষেত্রে স্থানীয় মানের তারতম্য হয়। যেমন দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে কোন সংখ্যার সর্বডানের অংকের মান নিজস্ব মানের একক বা এক গুণ, ডান দিক হতে দ্বিতীয় ঘরে অবস্থিত অংকের স্থানীয় মান নিজস্ব মানের দশ গুন, তৃতীয় ঘরে অবস্থিত অংকের স্থানীয় মান অংকটির নিজস্ব মানের একশত গুণ, এভাবে প্রতিটি ঘরের স্থানীয় মান তার পূর্ববর্তী ঘরের স্থানীয় মানের দশগুন হারে বাড়তে থাকে, অর্থাৎ প্রকৃত কথা হলো অংক যত বামে যেতে থাকে তার স্থানীয় মান সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি এর ঘাত অনুযায়ী বাড়তে থাকে। নিচের উদাহরণসমূহ লক্ষ্যনীয় –




দশমিক পদ্ধতির একটি উদাহরণঃ 953 সংখ্যাটিতে সর্বডানের অংক 3 এর স্থানীয় মান 3×100=3, আবার, 5 এর স্থানীয় মান 5×101=50 এবং 9 এর স্থানীয় মান 9×102=900, এভাবে সংখ্যাটির মান স্থানীয় মানসমূহের সমষ্টির সমান, 3+50+900=953 নয় শত তিপ্পান্ন।
বাইনারী পদ্ধতির একটি উদাহরণঃ 111 সংখ্যাটিতে সর্বডানের অংক 1 এর স্থানীয় মান 1×20=1, আবার মধ্যস্থিত 1 এর স্থানীয় মান 1×21=2 এবং সর্ববামের 1 এর স্থানীয় মান 1×22=4, এভাবে সংখ্যাটির মান স্থানীয় মানসমূহের সমষ্টির সমান, 1+2+4=7 যা উপরোক্ত বাইনারি সংখ্যাটির দশমিক সমতূল্য মান।

কোন একটি সংখ্যার মান বের করার জন্য তিনটি তথ্য প্রয়োজন হয় : 

  1. সংখ্যাটিতে ব্যবহৃত অংকগুলির নিজস্ব মান। 
  2. ব্যবহৃত সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি। 
  3. সংখ্যাটিতে ব্যবহৃত অংকগুলির স্থানীয় মান। 

একটি উদাহরণ: 

812 সংখ্যাটিতে ব্যবহৃত 8 প্রতীকটির নিজস্ব মান আট, 1 প্রতীকটির নিজস্ব মান এক এবং 2 প্রতীকটির নিজস্ব মান দুই। এবার এদের স্থানীয় মান জেনে নিই। 8 অংকটি শতকের ঘরে অবস্থিত তাই এর মান 8×100=800, আবার 1 অংকটি দশকের ঘরে তাই এর মান 1×10=10 এবং সর্বশেষ 2 অংকটি এককের স্থানে তাই এর স্থানীয় মান 2×1=2 সুতরাং উপরোক্ত তিনটি তথ্যের আলোকে সংখ্যাটির মান 800+10+2=812 আটশত বারো।

কয় ধরণের সংখ্যা পদ্ধতি? 
ইতিহাসের পরিক্রমায় দেখা যায় বিভিন্ন যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার হয়েছে। সেই সকল সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি আলাদা এবং অংক বা প্রতীকসমূহও আলাদা। কিন্তু ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের হিসাব নিকাশ, বর্তনীর নকশা প্রণয়নের কাজে এবং ডিজিটাল কম্পিউটারে প্রক্রিয়া করণের সুবিধার্থে যে সংখ্যা পদ্ধতিসমূহ বেশী ব্যবহৃত হয় তা আমাদের আলোচিত বিষয়। এ বিষয়টি বিবেচনা করলে চারটি পদ্ধতি বেশী আলোচিত তা হলোঃ
  1. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি
  2. দশমিক/ডেসিম্যাল সংখ্যা পদ্ধতি
  3. অকট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি
  4. হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যা পদ্ধতি  
দশমিক বা ডেসিম্যাল সংখ্যাপদ্ধতি : 
প্রাত্যহিক বাস্তব জীবনে হিসাব নিকাশ করার জন্য আমরা যে সংখ্যাপদ্ধতি ব্যবহার করি তা দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি। এর ভিত্তি 10 অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে 0 হতে 9 পর্যন্ত মোট 10টি সংখ্যা প্রতীক রয়েছে। ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের হিসাব নিকাশের সময় কখনো কখনো দশমিক সংখ্যার সাথে সাফিক্স হিসাবে এর ভিত্তি লিখে প্রকাশ করা হয়, এর মাধ্যমে বুঝা যায় সংখ্যাটি দশমিক সংখ্যা। যেমনঃ (9347)10 এখানে 9347 হলো ডেসিম্যাল সংখ্যা এবং 10 হলো এর ভিত্তি যার মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে সংখ্যাটি দশমিক পদ্ধতির সংখ্যা। 
দ্বিমিক বা বাইনারি সংখ্যাপদ্ধতি : 
এই সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি 2 অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে 0 এবং 1 মোট 2টি সংখ্যা প্রতীক রয়েছে। ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের হিসাব নিকাশের সময় কখনো কখনো দ্বিমিক সংখ্যার সাথে সাফিক্স হিসাবে এর ভিত্তি লিখে প্রকাশ করা হয়, এর মাধ্যমে বুঝা যায় সংখ্যাটি দ্বিমিক সংখ্যা। যেমনঃ (101001)2 এখানে 101001 হলো ডেসিম্যাল সংখ্যা এবং 2 হলো এর ভিত্তি যার মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে সংখ্যাটি দ্বিমিক বা বাইনারি পদ্ধতির সংখ্যা। 
অকট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি : 
এই সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি 8 অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে 0 হতে 7 পর্যন্ত মোট 8টি সংখ্যা প্রতীক রয়েছে। ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের হিসাব নিকাশের সময় কখনো কখনো অকট্যাল সংখ্যার সাথে সাফিক্স হিসাবে এর ভিত্তি লিখে প্রকাশ করা হয়, এর মাধ্যমে বুঝা যায় সংখ্যাটি অকট্যাল সংখ্যা। যেমনঃ (756)8 এখানে 756 হলো অকট্যাল সংখ্যা এবং 8 হলো এর ভিত্তি যার মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে সংখ্যাটি অকট্যাল পদ্ধতির সংখ্যা। 
হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যা পদ্ধতি : 
এই সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি 16 অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে 0 হতে 9 পর্যন্ত মোট 10টি সংখ্যা প্রতীক এবং সেই সাথে A, B, C, D, E, F এই 6টি বর্ণ প্রতীক রয়েছে। ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের হিসাব নিকাশের সময় কখনো কখনো হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যার সাথে সাফিক্স হিসাবে এর ভিত্তি লিখে প্রকাশ করা হয়, এর মাধ্যমে বুঝা যায় সংখ্যাটি হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যা। যেমনঃ (5C7F)16 এখানে 5C7F হলো হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যা এবং 16 হলো এর ভিত্তি যার মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে সংখ্যাটি হেক্সাডেসিম্যাল পদ্ধতির সংখ্যা।
 ভগ্নাংশ সংখ্যা মান : 
প্রত্যেক সংখ্যা পদ্ধতিতে ঐ পদ্ধতির র‌্যাডিক্স পয়েন্ট দিয়ে ভগ্নাংশ মান প্রকাশ করা হয়। র‌্যাডিক্স পয়েন্টের (.) বাম পার্শ্বের অংশকে পূর্ণ সংখ্যা (Integer) এবং ডান পার্শ্বের অংশকে ভগ্নাংশ সংখ্যা বলা হয়। যেমন (56.954)10 দশমিক সংখ্যাটিতে 56 হলো পূর্ণ সংখ্যা এবং মাঝখানে (.) হলো Radix Point দশমিক বিন্দু এবং ডান পার্শ্বে 954 হলো ভগ্নাংশ সংখ্যা। উল্লেখ্য যে পূর্ণ সংখ্যার ক্ষেত্রে অংকের অবস্থান দশমিক বিন্দু হতে বামে সরতে থাকলে তার স্থানীয় মান দশগুণ (Radix এর গুনিতক) হারে বাড়বে এবং ভগ্নাংশ সংখ্যার ক্ষেত্রে অংকের অবস্থান দশমিক বিন্দু হতে ডানে সরতে থাকলে তার স্থানীয় মান (Radix এর গুনিতক) দশ ভাগ হারে কমবে। অর্থাৎ দশমিক বিন্দুর ডানের ঘর দশ ভাগের এক ভাগ, তার ডানের ঘর একশত ভাগের এক ভাগ এবং তার ডানের ঘর এক হাজার ভারে এক ভাগ মান প্রকাশ করে।
রূপান্তরসমূহ : 
সংখ্যাকে এক পদ্ধতি হতে অন্য পদ্ধতিতে পরিবর্তনকে সংখ্যা পদ্ধতির রূপান্তর বলা হয়। সংখ্যাসমূহ এক পদ্ধতি হতে অন্য পদ্ধতিতে রূপান্তর যোগ্য যেমনঃ ডেসিম্যাল পদ্ধতিতে (11)10 সংখ্যাটির মান এগারো কিন্তু বাইনারিতে তা (1011)2। আবার বাইনারি পদ্ধতিতে (11)2 সংখ্যাটির মান ডেসিম্যলে (3)10 হবে। রূপান্তরের মাধ্যমে কোন সংখ্যার সংখ্যাগত মান পরিবর্তন হয় না শুধু পদ্ধতিগত উপস্থাপনা পরিবর্তন হয় মাত্র।
কেন রূপান্তর প্রয়োজন?
কম্পিউটার একটি জটিল ডিজিটাল বর্তনীর সমন্বয়। এই সকল বর্তনীসমূহ প্রোগ্রামের নির্দেশে বিভিন্ন গাণিতিক ও যৌক্তিক কার্য সম্পন্ন করে। কিন্তু এই সকল বর্তনীগুলিতে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার হয়, কম্পিউটার মানুষের ব্যবহার্য দশমিক সংখ্যা বোঝেনা তাই মানুষের বোধ্যগম্য সংখ্যাকে কম্পিউটারের নিকট গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরের প্রয়োজন হয়। আবার কম্পিউটারের বর্তনীতে মুহৃর্তের মধ্যে বহু সংখ্যক গাণিতিক ও যৌক্তিক কাজের শেষ ফলাফল তৈরী হয় বাইনারি সংখ্যায় এবং এই ফলাফল মানুষের সামনে হুবহু তুলে ধরলে মানুষের নিকট তা সহজে বোধগম্য হবেনা কারন মানুষ বাইনারি পদ্ধতিতে অভ্যস্থ নয়, তাই এখানে প্রয়োজন ফলাফলটিকে মানুষের সামনে উপস্থাপনের পূর্বে তা মানুষের বোধগম্য পদ্ধতি ডেসিম্যাল সংখ্যায় রূপান্তর করে উপস্থাপন করা। এছাড়া ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের নকশা প্রণয়ন, বর্তনী গঠন ও নানাবিধ প্রয়োজনে সংখ্যা পদ্ধতি রূপান্তরের প্রয়োজন রয়েছে। 
ডেসিম্যাল হতে বাইনারিতে রূপান্তর : 
দশমিক পূর্ণ সংখ্যাকে বাইনারীতে রূপান্তরের জন্য ভাগশেষ 0 না হওয়া পর্যন্ত সংখ্যাটিকে ক্রমাগত 2 দ্বারা ভাগ করতে হবে। শেষের দিক থেকে ভাগশেষ ক্রমান্বয়ে লিখতে হবে। ভাগশেষগুলিকে সাজিয়ে সংখ্যাটির সমতূল্য বাইনারি সংখ্যা পাওয়া যায়। যেমন: 97 সংখ্যাটির বাইনারি সমতূল্য সংখ্যা নির্ণয়ের পদ্ধতি নিম্নরূপঃ



ডেসিম্যাল হতে বাইনারীতে রূপান্তর
সুতরাং 9710 = 11000012
দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যাকে সমতূল্য বাইনারীতে রূপান্তরের জন্য গুনফল 1 না হওয়া পর্যন্ত ক্রমাগত সংখ্যাটিকে 2 দ্বারা গুণ করতে হবে। অবশেষে প্রাপ্ত সকল পূর্ণ সংখ্যগুলি পরপর সাজিয়ে সমতূল্য বাইনারী ভগ্নাংশ সংখ্যা পাওয়া যাবে। চিত্রের উদাহরণটি লক্ষ করুনঃ


দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যার বাইনারী 
সুতরাং (0.375)10 = (0.011)2
কোন দশমিক সংখ্যায় পূর্ণ এবং ভগ্নাংশ উভয় অংশ থাকলে পূর্ণ এবং ভগ্নাংশ উভয় অংশ আলাদা আলাদা ভাবে বাইনারীতে রূপান্তর করতে হবে। অতঃপর উভয় অংশের মাঝে বিন্দু/পয়েন্ট স্থাপন করে অংশ দুটিকে একত্রিত করতে হবে। যেমন 97.37510 সংখ্যাটিকে বাইনারীতে রূপান্তর করলে 1100001.0112 হবে। 

একটি অকট্যাল হতে বাইনারি রূপান্তর :

0 হতে 7 পর্যন্ত অকট্যাল অংকগুলিকে 3 বিট বাইনারী সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা যায়। কাজেই কোন অকট্যাল সংখ্যার অংকগুলিকে তাদের নিজ নিজ স্থানে সমতূল্য 3বিটের বাইনারী সংখ্যা দ্বারা প্রতিস্থাপন করলে অকট্যাল সংখ্যাটির সমতূল্য বাইনারী সংখ্যা পাওয়া যায়। যেমন নিচের উদাহরণটি: 


অকট্যাল থেকে বাইনারী
উপরের চিত্রে 0 হতে 7 পর্যন্ত অকট্যাল অংকগুলির সমতূল্য 3 বিটের বাইনারী মান দেয়া হয়েছে এবং 257 এবং 227 দুটি অকট্যাল সংখ্যাকে বাইনারীতে রূপান্তর দেখানো হয়েছে। 257 সংখ্যাটির প্রতিটি অংকের 3 ডিজিট সমতূল্য বাইনারী মান পরস্পর সাজিয়ে পাই 010101111, যেহেতু সর্ব বামের শূণ্যের কোন মূল্য নেই তাই সংখ্যাটি হবে 10101111, সুতরাং 2578 = 101011112, অনুরূপভাবে 2278 = 10010111হবে। 

হেক্সাডেসিম্যাল হতে বাইনারি রূপান্তর : 

1 হতে F পর্যন্ত হেক্সাডেসিম্যাল অংকগুলিকে 4 বিট বাইনারী সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা যায়, এবং কোন হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যার অংকগুলিকে তাদের নিজ নিজ স্থানে সমতূল্য 4বিটের বাইনারী সংখ্যা দ্বারা প্রতিস্থাপন করলে হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যাটির সমতূল্য বাইনারী সংখ্যা পাওয়া যায়। যেমন নিচের উদাহরণটি লক্ষ করুনঃ




হেক্সাডেসিম্যাল থেকে বাইনারী
উপরের চিত্রে 0 হতে F পর্যন্ত হেক্সাডেসিম্যাল অংকগুলির সমতূল্য 4 বিটের বাইনারী মান দেয়া হয়েছে এবং 2A7 এবং 227 দুটি হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যাকে বাইনারীতে রূপান্তর দেখানো হয়েছে। 2A7 সংখ্যাটির প্রতিটি অংকের 4 ডিজিটের সমতূল্য বাইনারী মান পরস্পর সাজিয়ে পাই 001010100111, যেহেতু সর্ব বামের শূণ্যের কোন মূল্য নেই তাই সংখ্যাটি হবে 1010100111, সুতরাং 2A716 = 10101001112, অনুরূপভাবে 2278 = 1000100111হবে। 

ডেসিম্যাল হতে অকট্যাল রূপান্তর :



ডেসিম্যাল থেকে অকট্যাল রূপান্তর
দশমিক সংখ্যাকে পর্যায়ক্রমে 8 দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষগুলিকে নিয়মানুযায়ী সাজিয়ে দশমিকসংখ্যাটির সমতূল্য অকট্যাল সংখ্যা পাওয়া যায়। ভাগ করার সময় ভাগফল 8 অপেক্ষা কম না হওয়া পর্যন্ত পর্যায়ক্রমিক ভাগ প্রকৃয়া চালাতে হয়। চিত্রে 469 দশমিক সংখ্যাটির অকট্যাল সমতূল্য মান নির্নয় করা হয়েছে। এখানে দশমিক সংখ্যাটিকে অকট্যাল সংখ্যার ভিত্তি 8 দ্বারা অনবরত ভাগ করা হয়েছে। ভাগফল 8 অপেক্ষা কম হলে আর ভাগ করার প্রয়োজন নেই। এবার শেষ ভাগফলকে বামে রেখে পূর্ববর্তী ভাগশেষগুলিকে ডানদিকে পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে প্রাপ্ত 725 সংখ্যাটি অকট্যাল সমতূল্য সংখ্যা হবে। সুতরাং 46910 = 725

বাইনারি হতে অকট্যাল রূপান্তর : 



বাইনারী হতে অকট্যাল রূপান্তর
বাইনারী সংখ্যাটির ডান দিক হতে শুরু করে বাম দিকে তিনটি করে ডিজিট নিয়ে একটি করে গ্রুপ তৈরী করতে হবে। সর্ব বামের গ্রুপে তিন ডিজিট পূর্ণ না হলে শূণ্য (0) দ্বারা পূর্ণ করতে হবে। এভাবে একটি বাইনারী সংখ্যাতে কয়েকটি গ্রুপ হতে পারে। এবার প্রত্যেকটি বাইনারী গ্রুপের সমতূল্য ডেসিম্যাল মান নিজ নিজ স্থানে বসিয়ে সমতূল্য অকট্যাল সংখ্যা পাওয়া যায়। চিত্রের উদাহরণটি লক্ষনীয়ঃ
1111011 বাইনারী সংখ্যাটিকে ডান দিক হতে তিনটি করে ডিজিট নিয়ে একটি করে গ্রুপ তৈরী করা হয়েছে। সর্ব বামের গ্রুপে তিন ডিজিট পূর্ণ না হওয়ার কারনে দুটি  শূণ্য (0) দ্বারা তিন ডিজিট পূর্ণ করা হয়েছে। এভাবে বাইনারী সংখ্যাটি হতে তিনটি গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে। এবার প্রত্যেকটি বাইনারী গ্রুপের সমতূল্য ডেসিম্যাল মান নিজ নিজ স্থানে বসিয়ে সমতূল্য অকট্যাল সংখ্যা 173 পাওয়া যায়। সুতরাং 11110112 = 1738

হেক্সাডেসিম্যাল হতে অকট্যাল রূপান্তর : 



হেক্সাডেসিম্যাল হতে অকট্যাল
হেক্সাডেসিম্যাল হতে অকট্যালে রূপান্তরের ক্ষেত্রে প্রথমে হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যাটিকে সমতূল্য বাইনারী সংখ্যায় রূপান্তর করতে হবে। অতঃপর প্রাপ্ত বাইনারী সংখ্যাটিকে সমতূল্য অকট্যালে রূপান্তর করলেই কাংখিত অকট্যালে সংখ্যা পাওয়া যাবে। চিত্রে বর্ণিত পদ্ধতিটি লক্ষ্যনীয়। প্রথমে হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যাটির প্রতিটি অংককে 4 বিটের বাইনারী সংখ্যায় রূপান্তর করা হয়। অতঃপর বাইনারী অংকগুলিকে পাশাপাশি সাজিয়ে তা হতে 3 ডিজিটের বাইনারী গ্রুপে তৈরী করা হয় এবং উক্ত প্রতিটি গ্রুপকে সমতূল্য ডেসিম্যাল সংখ্যা দ্বারা প্রতিস্থাপন করলে প্রাপ্ত সংখ্যাটি কাংখিত অকট্যাল সংখ্যা। চিত্র হতে পাই 12A16 = 0452 = 4528

বাইনারী হতে ডেসিম্যাল রূপান্তরঃ

বাইনারী সংখ্যার প্রতিটি অংকের স্থানীয় মানসমূহ যোগ করে সমতূল্য ডেসিম্যাল সংখ্যা পাওয়া যায়। চিত্রের উদাহরণটি লক্ষ্যনীয়ঃ
B 2 D

অকট্যাল হতে হেক্সাডেসিম্যাল রূপান্তর : 

অকট্যাল হতে হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যায় রূপান্তরের প্রকৃয়া দুই ধাপে সম্পন্ন হয় প্রথমে অকট্যাল সংখ্যাটিকে সমতূল্য বাইনারী সংখ্যায় রূপান্তর করতে হয় অতঃপর প্রাপ্ত বাইনারী সংখ্যাটিকে হেক্সাডেসিম্যালে রূপান্তর করতে হয়। চিত্রের উদাহরণটি লক্ষ্যনীয়ঃ


অকট্যাল হতে হেক্সাডেসিম্যাল রূপান্তর
উদাহরণে দেখা যাচ্ছে 127 অকট্যাল সংখ্যাটির প্রত্যেকটি ডিজিটকে তিন বিটের বাইনারী মানে রূপান্তর করে একটি সংখ্যা পাওয়া যায়। প্রাপ্ত বাইনারী সংখ্যাটিকে ডান দিক হতে চার বিট করে একটি করে গ্রুপ তৈরী করা হয়েছে এবং সর্ব বামে প্রয়োজনীয় সংখ্যক 0 শূণ্য যোগ করে চার বিট পূর্ণ করা হয়েছে এবার প্রত্যকেটি চার বিটের গ্রুপকে সমতূল্য হেক্সাডেসিম্যাল মানে রূপান্তর করে একটি হেক্সাডেসিম্যল সংখ্যা পাওয়া যায়, যা নির্ণেয় সংখ্যা। সুতরাং 1278 = 5716

বাইনারি হতে হেক্সাডেসিম্যাল রূপান্তর : 

বাইনারী সংখ্যাটির ডান দিক হতে চারটি করে ডিজিট নিয়ে একটি করে গ্রুপ তৈরী করতে হবে। এভাবে প্রদত্ত সংখ্যাটি দ্বারা যতগুলি গ্রুপ তৈরী করা যায় ততগুলি গ্রুপ তৈরী করতে হবে। সর্ব বামের বা শেষ গ্রুপে চারটির কম বাইনারী ডিজিট হলে বাম পার্শ্বে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শূণ্য 0 দ্বারা চার ডিজিট পূর্ণ করতে হবে। এবার প্রতিটি প্রুপের সমতূল্য হেক্সাডেসিম্যাল মান নিজ নিজ স্থানে বসালেই হেক্সাডেসিম্যাল মান পাওয়া যাবে। চিত্রের উদাহরণ লক্ষ্যনীয়ঃ সুতরাং 11110112 = 7B16





ডেসিম্যাল হতে হেক্সাডেসিম্যাল রূপান্তর :



ডেসিম্যাল হতে হেক্সাডেসিম্যাল রূপান্তর
দশমিক পূর্ণ সংখ্যাকে পর্যায়ক্রমে 16 দ্বারা ভাগ করে সর্বশেষ ভাগফল এবং পূর্ববর্তী ভাগফলগুলিকে পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যা পাওয়া যায়। পাশের চিত্রে একটি উদাহরণ দেয়া হয়েছে। এখানে 85010 = 35216
উল্লেখ্য যে, ডেসিম্যাল 10, 11, 12, 13, 14, 15 সংখ্যাগুলিকে হেক্সাডেসিম্যালে যথাক্রমে A, B, C, D, E, F দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

অকট্যাল হতে ডেসিম্যাল রূপান্তর : 

অকট্যাল সংখ্যার প্রতিটি অংকের স্থানীয় মান যোগ করে সংখ্যাটির সমতূল্য দশমিক মান নির্ণয় করা যায়। যেমনঃ
(123)8 = 3×80+2×81+1×82 = (83)10 আবার
(405)8 = 5×80+0×81+4×82 = (261)10
ভগ্নাংশ সংখ্যার ক্ষেত্রেঃ
(.540)8 = 5×8–1+4×8–2+0×8–3 = .625+.0625 = (.6875)10
সুতরাং, (123.540)8 = (83.6875)10

হেক্সাডেসিম্যাল হতে ডেসিম্যাল রূপান্তর : 

প্রথমে হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যাটির প্রতিটি অংককে চার ডিজিটের সমতূল্য বাইনারী মানে রূপান্তর করতে হবে। অতঃপর প্রাপ্ত বাইনারী সংখ্যাটিকে সমতূল্য ডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করলে দশমিক সমতূল্য মান পাওয়া যাবে। উল্লেখ্য যে বাইনারী হতে ডেসিম্যাল সংখ্যায় রূপান্তর প্রকৃয়া পূর্বে দেখানো হয়েছে। উদাহরণটি লক্ষ্যনীয়ঃ
B5D16  = 1011  0101  1101 = 101101011101 = 290910

প্রশ্নঃ বাইনারি সংখ্যা কম্প‌িউটারের জন্য ক‌েন অত্যাবশ্যকীয়- ব‌িশ্ল‌েষণ কর।

উত্তরঃ বাইনারি সংখ্যা দ্বারা কম্প‌িউটার ন‌িয়ন্ত্রিত হয় তার স্বপক্ষ‌ে যুক্ত‌ি নিম্ন‌ে দেয়া হল‌ো- 

১. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধত‌িতে যেহ‌েতু ০ এবং ১ এই দুইট‌ি বিট (Bit) ব্যবহৃত হয়, তাই ইল‌েক্ট্রন‌িক যন্ত্রে এই পদ্ধত‌ি ব্যবহার করা সুব‌িধাজনক। 

২. কম্প‌িউটারের ক্ষ‌েত্রে বা য‌ে কোন ইল‌েক্ট্রন‌িক যন্ত্র দুইট‌ি অবস্থা সহজ‌েই বুঝত‌ে পারে। একট‌ি হল‌ো সুইচ অন (ON) ও অপরট‌ি হল‌ো সুইচ অফ (OFF)। বাইনারি ০ বি‌ট (Bit) দ্বারা অফ (OFF) বা ল‌ো (LOW) বা ফলস (FALSE) বা ন‌ো (NO) এবং ১ ব‌িট(Bit) দ্বারা অন (ON) বা হাই (High)বা ট্রু (True) বা ইয়‌েস (Yes) বুঝান‌ো হয়ে থাক‌ে। 

৩. য‌েহেতু কম্প‌িউটার ইল‌েক্ট্রিক স‌িগন্যাল‌ের সাহায্যে কাজ করে, তাই বাইনারি সিগন্যাল (০ ও ১) ক‌ে সহজ‌ে ইল‌েক্ট্রিক স‌িগন্যাল‌ের সাহায্যে প্রকাশ করা যায়। 

৪. বাইনারি সিস্ট‌েমে দুট‌ি অবস্থা থাকায় ইল‌েক্ট্রিক সার্ক‌িট ড‌িজাইন খুব সহজ। ফল‌ে কম্প‌িউটার ড‌িজাইন‌ে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধত‌ি ব্যবহার করা সুব‌িধাজনক।


প্রশ্নঃ পৃথ‌িবীর সকল ভাষাক‌ে কোন ক‌োডের মাধ্যম‌ে কোডভুক্ত করা হয়‌েছে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ Unicode শব্দ‌ের অর্থ হল‌ো Universal Code বা সার্বজনীন ক‌োড। এই ক‌োডের মাধ্যম‌ে বিশ্বের সকল দ‌েশের সকল ভাষাক‌ে কম্প‌িউটার ক‌োডভুক্ত করা হয়। ইউন‌িকোড মূলত ২ বাইট বা ১৬ ব‌িটের ক‌োড। ফল‌ে ২১৬ বা ৬৫৫৩৬টি বিভিন্ন বর্ণ, অক্ষর, সংখ্যা, চ‌িহ্নক‌ে ক‌োডভুক্ত করা যায়। ইউন‌িকোড ASCII ক‌োডের সাথ‌ে সামঞ্জস্যপূর্ণ, অর্থাৎ ইউন‌িকোডের প্রথম ২৫৬ট‌ি কোড ASCII ক‌োডের অনুরূপ ব‌িধায় সবক্ষ‌েত্রে ইউনিকোডক‌ে সমর্থনয‌োগ্য ক‌োড হ‌িসেবে ব্যবহার করা যায়। তাই বলা হয়ে থাক‌ে - ইউন‌িকোড (Unicode) সারা পৃথ‌িবীর সকল ভাষার মাতৃভাষার বর্ণক‌ে কম্প‌িউটারের বর্ণ‌ে পরিণত করেছে। বাংলাদ‌েশ সরকার বাংলা ভাষাক‌ে ইউনিকোডভুক্ত করার জন্য Unicode Consortium এর সদস্য হয়‌েছে। বাংলা অক্ষর ল‌েখার জন্য ইউন‌িকোড হল‌ো  \u0980-\u09FF ।

প্রশ্নঃ 'ব‌িট ও বাইট এক নয়'- ক‌েন?

উত্তরঃ কম্প‌িউটারের ন‌িজস্ব ভাষা ন‌েই। এট‌ি কেবল ব‌িদ্যুতের ভাষা ব‌োঝে। তাই ইংরেজি, বাংলা, আরব‌ি প্রভৃত‌ি ক‌োন ভাষাই কম্প‌িউটার ব‌োঝে না। কম্প‌িউটারক‌ে এসব ভাষা ব‌োঝান‌োর জন্য বাইনারি সংখ্যা পদ্ধত‌ি ব্যবহার করা হয়। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধত‌িত‌ে শুধুমাত্র ০ (শূন্য) এবং ১ (এক) এই দুটি অঙ্ক ব্যবহার করা হয়। ০ (শূন্য) এবং ১ (এক) অঙ্ক দুট‌িকে বিট (Bit) বাইনারি ডিজ‌িট (Binary Digit) বলা হয়। অর্থাৎ বাইনারি সংখ্যা পদ্ধত‌ির প্রত‌িটি অঙ্কই এক একট‌ি বিট (Bit)। অপরদ‌িকে, ৮টি ব‌িট একত্রে যখন ক‌োন একট‌ি অঙ্ক, বর্ণ বা ব‌িশেষ চ‌িহ্নক‌ে প্রকাশ করে, তখন তাক‌ে বাইট বল‌ে। ৮ ব‌িট ন‌িয়ে একট‌ি বাইট গঠ‌িত হয়। কম্প‌িউটারের ম‌েমোরিকে বাইট দ্বারা পরিমাপ করা হয়। সুতরাং ব‌িট ও বাইট এক নয়।

প্রশ্নঃ কম্প‌িউটার য‌োগের মাধ্যম‌ে ব‌িভিন্ন গাণ‌িতিক সমস্যার সমাধান করে-বুঝ‌িয়ে লেখ।

উত্তরঃ কম্প‌িউটার য‌োগের মাধ্যম‌ে ব‌িভিন্ন গাণ‌িতিক সমস্যার সমাধান করে। গাণ‌িতিক কাজ বলত‌ে য‌োগ, ব‌িয়োগ, গুন ও ভাগ‌ের কাজক‌ে বুঝায়। এত‌ে প্রত্যেকট‌ি কাজ‌ের জন্য আলাদা সার্ক‌িটের প্রয়‌োজন, যা খুব ব্যয়বহুল ও জট‌িল। তাই কম্প‌িউটার ২-এর পরিপূরক গঠন‌ের ফল‌ে সব কাজই য‌োগের মাধ্যম‌ে করা সম্ভব। এর ফল‌ে কম্প‌িউটারে সার্ক‌িটের মাত্রা কম‌ে, দাম‌ে সস্তা, দ্রুতগত‌িতে কাজ করত‌ে সাহায্য করে ও সার্ক‌িটের জট‌িলতা কমায়।

প্রশ্নঃ বাইনারি ছাড়া অন্য সংখ্যাক‌ে কম্প‌িউটার সরাসরি গ্রহণ করে না- ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ কম্প‌িউটার একট‌ি ইলেক্ট্রন‌িক যন্ত্র। কম্প‌িউটারে বাইনারি সংখ্যা ব্যবহার করার মূল কারণ হচ্ছ‌ে কম্প‌িউটারের অভ্যন্তরীণ কার্যাবল‌ি সংখ্যা ন‌ির্ভর। ইল‌েক্ট্রন‌িক ড‌িবাইস- গুল‌ো মূলত সুইচ অন বা অফ এ দুই ম‌োডক‌ে কাজ‌ে লাগ‌িয়ে কাজ করে বিধায় ড‌িজ‌িটাল সার্ক‌িটে বাইনারি সংখ্যার ব্যবহার দ‌েখা যায়। বাইনারি পদ্ধত‌িতে দুইট‌ি প্রত‌ীকের ব্যবহার করার জন্য ব‌িদ্যুত‌ের উপস্থ‌িতি বা অনুপস্থ‌িতি ক‌িংবা হাই - ল‌ো অবস্থার দ্বারা সহজ‌েই কাজ করা যায়। বাইনারি সংখ্যার প্রত‌ীক মাত্র দু'ট‌ি হওয়ায় এবং বাইনারি অ্যালজ‌েবরা বা বুল‌িয়ান অ্যালজ‌েবরার দ্বারা সকল দশম‌িক সংখ্যার গাণ‌িতিক কাজকর্ম করা সম্ভব ব‌িধায় কম্প‌িউটারে বাইনারি সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। এজন্য অন্য ক‌োন সংখ্যাক‌ে কম্প‌িউটার সরাসরি গ্রহণ করে না।

প্রশ্ন: সংখ্যা পদ্ধতি কী? সংখ্যা পদ্ধতির বেজ ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর: কোনো সংখ্যা লেখা বা প্রকাশ করার পদ্ধতিকেই সংখ্যা পদ্ধতি বলে। 


কোনো সংখ্যা পদ্ধতির বেজ হচ্ছে ঐ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মৌলিক চিহ্ন সমূহের মোট সংখ্যা। যেমন: দশমিক সংখ্যাতে মোট মৌলিক প্রতিক (0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9)10টি। সুতরাং দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির বেজ 10 । তেমনিভাবে বাইনারি সংখ্যার বেজ 2 । অকটাল সংখ্যার বেজ 8 । হেক্সাডেসিমেল সংখ্যার বেজ 16 । 


প্রশ্ন: লজিক গেইট কী? '১ + ১ + ১ = ১' - ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: বুলিয়ান অ্যালজেবরার ব্যবহারিক প্রয়োগের জন্য যে সকল ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স সার্কিট ব্যবহার করা হয় তাকে লজিক গেইট বলে। 


বুলিয়ান অ্যালজেবরার অর গেইটে, দুইয়ের অধিক চলকের ক্ষেত্রে, যেকোনো একটি চলক সত্য হলে অর গেইটে এর ফল সত্য হয়। বুলিয়ান অ্যালজেবরায় সত্য ১ এবং মিথ্যাকে ০ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এখানে ০ এবং ১ কোনো সংখ্যা নয় এরা প্রকৃত অর্থে লজিক লেভেল। সুতরাং বুলিয়ান অ্যালজেবরা অর গেইট অনুসারে '১ + ১ + ১ = ১' । 


প্রশ্ন: 'বাইনারি যোগ ও বুলিয়ান যোগ এক নয়' - ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: বাইনারি সংখ্যা ব্যবহার করে গণিতের নিয়মে যে যোগ করা হয় তাকে বাইনারি যোগ বলা হয়। আর বুলিয়ান অ্যালজেবরার অর অপারেশন বাস্তবায়নের জন্য যে যোগ করা হয় তাকে বুলিয়ান যোগ বলে। এখানে উল্লেখ্য যে, বাইনারি যোগে যে, ০, ১ ব্যবহৃত হয় তা আসলে বাইনারি সংখ্যা কিন্তু বুলিয়ান অ্যালজেবরায় যে ০, ১ ব্যবহৃত হয় তা কোনো সংখ্যা নয় এগুলো আসলে লজিক লেভেল। এজন্য বলা হয় বাইনারি যোগ ও বুলিয়ান যোগ এক নয়।


প্রশ্ন: আধুনিক কম্পিউটারে কাজের গতি বৃদ্ধিতে ২-এর পরিপূরক পদ্ধতি কিভাবে সহায়তা করতে পারে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: ২-এর পরিপূরক পদ্ধতিতে যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগ একই বর্তনী দিয়ে করা যায়। একই বর্তনী দিয়ে যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগ করা যায় বলে কোন যৌগিক নির্দেশনা বাস্তবায়নে কম্পিউটার প্রসেসরে সময় কম লাগে ফলে কাজের গতি বৃদ্ধি পায়।


প্রশ্ন: সত্যক সারণি কেন ব্যবহার করা হয় লেখ।

উত্তর: সত্যক সারণির মাধ্যমে কোন লজিক গেইটের ইনপুটের বিভিন্ন সমন্বয়ের পরিবর্তিত আউটপুট সহজেই পাওয়া যায়। তাছাড়া সত্যক সারণির সহায়তায় যে কোন বুলিয়ান উপপাদ্য সহজেই প্রমাণ করা যায় বলে সত্যক সারণি ব্যবহার করা যায়।
Md: Fazle Rabbi





No comments

অ্যাপল জিনিয়াস স্টিভ ওজনিয়াকের মজার সব গল্প

স্টিভ ওজনিয়াক, অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। তিনি ও স্টিভ জবস মিলে শূন্য থেকে গড়ে তুলেছিলেন আজকের টেক-জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটিকে। সম্প্রতি স...

Powered by Blogger.