সংখ্যা পদ্ধতি
শিক্ষার্থী
বন্ধুরা সংখ্যা পদ্ধতি বিষয়ক লেকচারে তোমাদের সবাইকে স্বাগতম। আজকে আলোচনা
করব কিভাবে দশমিক সংখ্যা থেকে বাইনারি, অক্টাল ও হেক্সাডেসিমেল সংখ্যায়
রূপান্তর করা যায়। ত শুরুতে আলোচনা করা যাক কিভাবে দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি
সংখ্যায় রূপান্তর করা যায়।
উদাহরণ হিসেবে আমরা (৬৬.৩৭৫)১০ সংখ্যাটিকে বাইনারিতে রূপান্তর করব। লক্ষ্য করে দেখ সংখ্যাটির দুইটা অংশ, একটি পূর্ণ দশমিক সংখ্যা (৬৬)১০ এবং অন্যটি ভগ্নাংশ দশমিক সংখ্যা (.৩৭৫)১০।
পূর্ণ দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরঃ
১. দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরিত করার জন্য দশমিক সংখ্যাটিকে ২ দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষকে সংরক্ষণ করতে হবে।
২. ভাগফলকে পুনরায় ২ দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষকে সংরক্ষণ করতে হবে।
৩. এ প্রক্রিয়া ততক্ষণ পর্যন্ত চলতে থাকবে যতক্ষণ না ভাগফল ০ হয়।
৪. প্রাপ্ত ভাগশেষগুলোকে শেষ থেকে প্রথম দিকে ধারাবাহিকভাবে অর্থাৎ উল্টো করে সাজিয়ে লিখলে ১ ও ০ এর সমন্বয়ে যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে তাই দশমিক সংখ্যার সমকক্ষ বাইনারি সংখ্যা।
ত এই ছবিটি লক্ষ্য কর, নিয়ম অনুযায়ী ৬৬ কে প্রথমে ২ দিয়ে ভাগ করা হয়েছে। ভাগফল ৩৩ এবং ভাগশেষ ০। তারপর ৩৩ কে আবার ২ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল ১৬ আর ভাগশেষ ১। ১৬ কে ২ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল ৮ আর ভাগশেষ ০। এভাবে চলতে চলতে ২ কে ২ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল ১ আর ভাগশেষ ০। ১ কে ২ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল দাঁড়াচ্ছে ০ আর ভাগশেষ ১। যেহেতু ভাগফল ০ পাওয়া গেছে, তাই ভাগ করার কাজটা এখানেই সমাপ্ত। এবার ফলাফল লেখার পালা। উপরের চার নং নিয়ম অনুযায়ী ভাগশেষগুলোকে শেষ থেকে প্রথম দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে লিখলে ফলাফল পাওয়া যায় ১০০০০১০। এখানে প্রথম যে ভাগশেষটি পেয়েছি, এটাকে বল হয় LSB: Least Significant Bit (সর্বনিম্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্ক)। আর সর্বশেষ ভাগশেষটি হল MSB: Most Significant Bit (সর্ব্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্ক)।
সুতরাং, (৬৬)১০ = (১০০০০১০)২।
ভগ্নাংশ দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরঃ
১. ভগ্নাংশ অংশকে ২ দিয়ে গুণ করতে হবে। গুণ করার পর যে পূর্ণ অংশটি থাকবে তাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
২. অবশিষ্ট ভগ্নাংশটিকে পুনরায় ২ দিয়ে গুণ করতে হবে। গুণ করার পর যে পূর্ণ অংশটি থাকবে তাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
৩. এ প্রক্রিয়া ততক্ষণ পর্যন্ত চলতে থাকবে যতক্ষণ না পর্যন্ত ভগ্নাংশ ০ হয়।
৪. সংরক্ষিত পূর্ণ অংশগুলোকে প্রথম থেকে শেষ দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে লিখলে ১ ও ০ এর সমন্বয়ে যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে তাই দশমিক সংখ্যার সমকক্ষ বাইনারি সংখ্যা।
এবার নিয়ম অনুযায়ী .৩৭৫ কে ২ দিয়ে গুণ করা হয়েছে। যে ফলাফল পাওয়া গেছে তার পূর্ণ অংশটিকে সাইডে রেখে, ভগ্নাংশটিকে অর্থাৎ .৭৫০ কে ২ দিয়ে গুণ করা হয়েছে। তারপর .৫০ কে আবার ২ দিয়ে গুণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত এসে দেখা গেল যে, গুণ করে যে মানটি পেয়েছি তার ভগ্নাংশ এর মান ০ হয়েছে। তাই গুণ করার কাজ স্টপ। এখানে সবার উপরের পূর্ণ মানটি হল MSB এবং সবার শেষেরটি হল LSB. নিয়ম অনুযায়ী এবার পূর্ণ অংশগুলোকে প্রথম থেকে শেষ দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে লিখলে ফলাফল পাওয়া যায় ০.০১১।
সুতরাং, (.৩৭৫)১০ = (০.০১১)২। এখানে অনেকেই যে ভুলটা করে তা হল উত্তর লিখার সময় (.) চিহ্নটা লিখে না। এই কাজ করা যাবে না।
অতএব ফাইনাল উত্তর হলঃ (৬৬.৩৭৫)১০ = (১০০০০১০.০১১)২।
এখানে যে উদাহরণটি করেছি তা ছিল (৬৬.৩৭৫)১০। অর্থাৎ সংখ্যাটিতে পূর্ণ এবং ভগ্নাংশ দুই পার্টই আছে। পরীক্ষায় কিন্তু শুধু পূর্ণ অংশ (৬৬)১০ কিংবা শুধু ভগ্নাংশ (.৩৭৫)১০ ও দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে যা চাওয়া হবে সে অনুযায়ীই উত্তর লিখতে হবে। নিচে একটি উদাহরণ দেখি চল।
(.৭৭)১০ কে বাইনারীতে রূপান্তরঃ
উপরের নিয়ম এবং উদাহরণটি যদি তুমি ভালোমত বুঝে থাক, তাহলে পাশের চিত্রের এই উদাহরণটি কিভাবে সমাধান করা হল, আশা করি তুমি তা বুঝে গেছ। এখানে লক্ষ্য কর, উপরে বলেছিলাম দশমিক ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত না ভগ্নাংশ ০ হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত গুণের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু এখানে ৫-৬ বার গুণ করেও আমরা ভগ্নাংশ ০ পর্যন্ত মান পাইনি। এক্ষেত্রে যদি এমন হয় তুমি গুণ করার কাজটা স্টপ করে দিবা এবং নিচে এভাবে ….. দিয়ে দিবা, মানে কাজটা কনটিনিউ। এক্ষেত্রে মানটা আসন্ন মান হিসেবে রাখব আমরা।
সুতরাং, (.৭৭)১০ = (.১১০০০১…)২।
ত এখন তোমার মাথায় কিছু প্রশ্ন আসতে পারে। ভাইয়া, আমরা এখানে ২ দিয়েই কেন ভাগ করব? আচ্ছা! একটু লক্ষ্য করে দেখ ত, কোন একটা সংখ্যাকে যখন ২ দিয়ে ভাগ করা হয়, তার ভাগশেষ কি হয়? ভাগশেষ ০ হয় নতুবা ১ হয়। এখানে লক্ষ্য কর আমরা কিন্তু ভাগশেষের মানগুলো থেকেই আমাদের উত্তরটি পেয়েছি। ভাগশেষ ০ এবং ১ ব্যতিত আর কিছু ছিল না। এবং আমরা এটাও জানি যে, বাইনারি সংখ্যার চিহ্ন বা ডিজিট হল ০ এবং ১।
ভাইয়া, পূর্ণ দশমিক এর ক্ষেত্রে ভাগশেষগুলোকে কেন শেষ থেকে প্রথম দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে ফলাফল নেওয়া হয়। এর উল্টোটা অর্থাৎ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাজিয়ে কেন করা হয় না?
এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য চল ভাগ করার কাজটা কনটিনিউ করি। পাশের চিত্রে তোমারা এটা দেখতে পাচ্ছ। লক্ষ্য কর, তখন আমাদের ফলাফল এসেছিল (১০০০০১০)২ । ত নিয়ম অনুযায়ী ভাগশেষগুলো নিচ থেকে যদি উপরের দিকে বসাই তাহলে এবার ফলাফল দাঁড়ায় (০০১০০০০১০)২। দেখ কোন পূর্ণ সংখ্যার বামে যদি এ রকম দুই তিনটা শূণ্য বসে তাহলে কিন্তু মানের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। কিন্তু যদি আমরা উপর থেকে নিচের দিকে মান বসাতাম তাহলে ফলাফল হত (১০০০০১০০০)২। এতে কিন্তু মানের একটা বিরাট পরিবর্তন হয়ে যায়।
ভাইয়া, ভগ্নাংশ দশমিক এর ক্ষেত্রে পূর্ণ অংশগুলোকে কেন শুরু থেকে শেষ দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে ফলাফল নেওয়া হয়। এর উল্টোটা অর্থাৎ শেষ থেকে শুরু পর্যন্ত সাজিয়ে কেন করা হয় না?
ত এবার গুণের কাজটা যদি কনটিনিউ করি। পাশের চিত্রে তোমরা দেখতে পাচ্ছ। এবার লক্ষ্য কর, তখন আমাদের ফলাফল এসেছিল (০.০১১)২ । ত নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণ অংশগুলোকে প্রথম থেকে শেষ দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে লিখলে ফলাফল পাওয়া যায় (০.০১১০০)২। দেখ পয়েন্টিং (.) যুক্ত কোন সংখ্যার ডানে যদি এ রকম দুই তিনটা শূণ্য বসে তাহলে কিন্তু মানের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। কিন্তু যদি আমরা নিচ থেকে উপরের দিকে মান বসাতাম তাহলে ফলাফল হত (০.০০০১১)২। এতে কিন্তু মানের একটা বিরাট পরিবর্তন হয়ে যায়।
আশা করি বিষয়গুলো সবাই পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছ।
দশমিক সংখ্যা থেকে অক্টাল সংখ্যায় রূপান্তরঃ
দশমিক থেকে অক্টালে রূপান্তরের ক্ষেত্রে, বাইনারিতে যে পদ্ধতিতে রূপান্তর করেছি, এখানেও একই নিয়ম। শুধু পূর্ণ দশমিক এর ক্ষেত্রে ৮ দিয়ে ভাগ করতে হবে। আর ভগ্নাংশ দশমিক এর ক্ষেত্রে ৮ দিয়ে গুণ করতে হবে। ফলাফল লেখার নিয়মটাও একই।
এখানে (৯২৮.১২)১০ সংখ্যাটির অক্টাল মান হচ্ছে (১৬৪০.০৭৫৩৪১….)৮।
দশমিক সংখ্যা থেকে হেক্সাডেসিমাল সংখ্যায় রূপান্তরঃ
দশমিক থেকে হেক্সাডেসিমালে রূপান্তর করার প্রক্রিয়াও একই। এখানে পূর্ণ দশমিক এর ক্ষেত্রে ১৬ দিয়ে ভাগ করতে হবে। আর ভগ্নাংশ দশমিক এর ক্ষেত্রে ১৬ দিয়ে গুণ করতে হবে। ফলাফল লেখার নিয়মটাও একই।
তবে এক্ষত্রে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। ভাগশেষের কিংবা গুণের ক্ষেত্রে পূর্ণঅংশের মান কিন্তু এই রকম ১০, ১৫, ১৪ আসতে পারে। লক্ষ্য কর এই ১০ কিংবা ১৫ কিন্তু কোন ইউনিক ডিজিট না। ১ ও ০ ডিজিটের সমন্বয়ে তৈরী হয়েছে ১০। সুতরাং এভাবে লিখা যাবে না। নিচের চার্ট অনুযায়ী ইংরেজি বর্ণমালার লেটার বসাতে হবে। অর্থাৎ ১০ এর পরিবর্তে এর ইকোইভিলেন্ট A বসাতে হবে।
সুতরাং, (২৪৭৯.২৩)১০ সংখ্যাটির হেক্সাডেসিমাল মান হচ্ছে (৯AF.৩AE১৪৭….)১৬।
ত এই ছিল আজকের লেকচারে। আশা করি তোমারা বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছ। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট বক্স এর মাধ্যমে তা করতে পার। সবাইকে অনুরোধ করব, কয়েকবার করে লেখাটা আস্তে আস্তে মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করবে এবং বইয়ের অনুশীলনী থেকে প্রচুর প্র্যাকটিস করবে। এতে করে বিষয়গুলো ভালোমত বুঝা যায়।
উদাহরণ হিসেবে আমরা (৬৬.৩৭৫)১০ সংখ্যাটিকে বাইনারিতে রূপান্তর করব। লক্ষ্য করে দেখ সংখ্যাটির দুইটা অংশ, একটি পূর্ণ দশমিক সংখ্যা (৬৬)১০ এবং অন্যটি ভগ্নাংশ দশমিক সংখ্যা (.৩৭৫)১০।
পূর্ণ দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরঃ
১. দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরিত করার জন্য দশমিক সংখ্যাটিকে ২ দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষকে সংরক্ষণ করতে হবে।
২. ভাগফলকে পুনরায় ২ দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষকে সংরক্ষণ করতে হবে।
৩. এ প্রক্রিয়া ততক্ষণ পর্যন্ত চলতে থাকবে যতক্ষণ না ভাগফল ০ হয়।
৪. প্রাপ্ত ভাগশেষগুলোকে শেষ থেকে প্রথম দিকে ধারাবাহিকভাবে অর্থাৎ উল্টো করে সাজিয়ে লিখলে ১ ও ০ এর সমন্বয়ে যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে তাই দশমিক সংখ্যার সমকক্ষ বাইনারি সংখ্যা।
ত এই ছবিটি লক্ষ্য কর, নিয়ম অনুযায়ী ৬৬ কে প্রথমে ২ দিয়ে ভাগ করা হয়েছে। ভাগফল ৩৩ এবং ভাগশেষ ০। তারপর ৩৩ কে আবার ২ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল ১৬ আর ভাগশেষ ১। ১৬ কে ২ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল ৮ আর ভাগশেষ ০। এভাবে চলতে চলতে ২ কে ২ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল ১ আর ভাগশেষ ০। ১ কে ২ দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল দাঁড়াচ্ছে ০ আর ভাগশেষ ১। যেহেতু ভাগফল ০ পাওয়া গেছে, তাই ভাগ করার কাজটা এখানেই সমাপ্ত। এবার ফলাফল লেখার পালা। উপরের চার নং নিয়ম অনুযায়ী ভাগশেষগুলোকে শেষ থেকে প্রথম দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে লিখলে ফলাফল পাওয়া যায় ১০০০০১০। এখানে প্রথম যে ভাগশেষটি পেয়েছি, এটাকে বল হয় LSB: Least Significant Bit (সর্বনিম্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্ক)। আর সর্বশেষ ভাগশেষটি হল MSB: Most Significant Bit (সর্ব্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্ক)।
সুতরাং, (৬৬)১০ = (১০০০০১০)২।
ভগ্নাংশ দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরঃ
১. ভগ্নাংশ অংশকে ২ দিয়ে গুণ করতে হবে। গুণ করার পর যে পূর্ণ অংশটি থাকবে তাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
২. অবশিষ্ট ভগ্নাংশটিকে পুনরায় ২ দিয়ে গুণ করতে হবে। গুণ করার পর যে পূর্ণ অংশটি থাকবে তাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
৩. এ প্রক্রিয়া ততক্ষণ পর্যন্ত চলতে থাকবে যতক্ষণ না পর্যন্ত ভগ্নাংশ ০ হয়।
৪. সংরক্ষিত পূর্ণ অংশগুলোকে প্রথম থেকে শেষ দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে লিখলে ১ ও ০ এর সমন্বয়ে যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে তাই দশমিক সংখ্যার সমকক্ষ বাইনারি সংখ্যা।
এবার নিয়ম অনুযায়ী .৩৭৫ কে ২ দিয়ে গুণ করা হয়েছে। যে ফলাফল পাওয়া গেছে তার পূর্ণ অংশটিকে সাইডে রেখে, ভগ্নাংশটিকে অর্থাৎ .৭৫০ কে ২ দিয়ে গুণ করা হয়েছে। তারপর .৫০ কে আবার ২ দিয়ে গুণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত এসে দেখা গেল যে, গুণ করে যে মানটি পেয়েছি তার ভগ্নাংশ এর মান ০ হয়েছে। তাই গুণ করার কাজ স্টপ। এখানে সবার উপরের পূর্ণ মানটি হল MSB এবং সবার শেষেরটি হল LSB. নিয়ম অনুযায়ী এবার পূর্ণ অংশগুলোকে প্রথম থেকে শেষ দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে লিখলে ফলাফল পাওয়া যায় ০.০১১।
সুতরাং, (.৩৭৫)১০ = (০.০১১)২। এখানে অনেকেই যে ভুলটা করে তা হল উত্তর লিখার সময় (.) চিহ্নটা লিখে না। এই কাজ করা যাবে না।
অতএব ফাইনাল উত্তর হলঃ (৬৬.৩৭৫)১০ = (১০০০০১০.০১১)২।
এখানে যে উদাহরণটি করেছি তা ছিল (৬৬.৩৭৫)১০। অর্থাৎ সংখ্যাটিতে পূর্ণ এবং ভগ্নাংশ দুই পার্টই আছে। পরীক্ষায় কিন্তু শুধু পূর্ণ অংশ (৬৬)১০ কিংবা শুধু ভগ্নাংশ (.৩৭৫)১০ ও দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে যা চাওয়া হবে সে অনুযায়ীই উত্তর লিখতে হবে। নিচে একটি উদাহরণ দেখি চল।
(.৭৭)১০ কে বাইনারীতে রূপান্তরঃ
উপরের নিয়ম এবং উদাহরণটি যদি তুমি ভালোমত বুঝে থাক, তাহলে পাশের চিত্রের এই উদাহরণটি কিভাবে সমাধান করা হল, আশা করি তুমি তা বুঝে গেছ। এখানে লক্ষ্য কর, উপরে বলেছিলাম দশমিক ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত না ভগ্নাংশ ০ হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত গুণের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু এখানে ৫-৬ বার গুণ করেও আমরা ভগ্নাংশ ০ পর্যন্ত মান পাইনি। এক্ষেত্রে যদি এমন হয় তুমি গুণ করার কাজটা স্টপ করে দিবা এবং নিচে এভাবে ….. দিয়ে দিবা, মানে কাজটা কনটিনিউ। এক্ষেত্রে মানটা আসন্ন মান হিসেবে রাখব আমরা।
সুতরাং, (.৭৭)১০ = (.১১০০০১…)২।
ত এখন তোমার মাথায় কিছু প্রশ্ন আসতে পারে। ভাইয়া, আমরা এখানে ২ দিয়েই কেন ভাগ করব? আচ্ছা! একটু লক্ষ্য করে দেখ ত, কোন একটা সংখ্যাকে যখন ২ দিয়ে ভাগ করা হয়, তার ভাগশেষ কি হয়? ভাগশেষ ০ হয় নতুবা ১ হয়। এখানে লক্ষ্য কর আমরা কিন্তু ভাগশেষের মানগুলো থেকেই আমাদের উত্তরটি পেয়েছি। ভাগশেষ ০ এবং ১ ব্যতিত আর কিছু ছিল না। এবং আমরা এটাও জানি যে, বাইনারি সংখ্যার চিহ্ন বা ডিজিট হল ০ এবং ১।
ভাইয়া, পূর্ণ দশমিক এর ক্ষেত্রে ভাগশেষগুলোকে কেন শেষ থেকে প্রথম দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে ফলাফল নেওয়া হয়। এর উল্টোটা অর্থাৎ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাজিয়ে কেন করা হয় না?
এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য চল ভাগ করার কাজটা কনটিনিউ করি। পাশের চিত্রে তোমারা এটা দেখতে পাচ্ছ। লক্ষ্য কর, তখন আমাদের ফলাফল এসেছিল (১০০০০১০)২ । ত নিয়ম অনুযায়ী ভাগশেষগুলো নিচ থেকে যদি উপরের দিকে বসাই তাহলে এবার ফলাফল দাঁড়ায় (০০১০০০০১০)২। দেখ কোন পূর্ণ সংখ্যার বামে যদি এ রকম দুই তিনটা শূণ্য বসে তাহলে কিন্তু মানের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। কিন্তু যদি আমরা উপর থেকে নিচের দিকে মান বসাতাম তাহলে ফলাফল হত (১০০০০১০০০)২। এতে কিন্তু মানের একটা বিরাট পরিবর্তন হয়ে যায়।
ভাইয়া, ভগ্নাংশ দশমিক এর ক্ষেত্রে পূর্ণ অংশগুলোকে কেন শুরু থেকে শেষ দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে ফলাফল নেওয়া হয়। এর উল্টোটা অর্থাৎ শেষ থেকে শুরু পর্যন্ত সাজিয়ে কেন করা হয় না?
ত এবার গুণের কাজটা যদি কনটিনিউ করি। পাশের চিত্রে তোমরা দেখতে পাচ্ছ। এবার লক্ষ্য কর, তখন আমাদের ফলাফল এসেছিল (০.০১১)২ । ত নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণ অংশগুলোকে প্রথম থেকে শেষ দিকে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে লিখলে ফলাফল পাওয়া যায় (০.০১১০০)২। দেখ পয়েন্টিং (.) যুক্ত কোন সংখ্যার ডানে যদি এ রকম দুই তিনটা শূণ্য বসে তাহলে কিন্তু মানের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। কিন্তু যদি আমরা নিচ থেকে উপরের দিকে মান বসাতাম তাহলে ফলাফল হত (০.০০০১১)২। এতে কিন্তু মানের একটা বিরাট পরিবর্তন হয়ে যায়।
আশা করি বিষয়গুলো সবাই পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছ।
দশমিক সংখ্যা থেকে অক্টাল সংখ্যায় রূপান্তরঃ
দশমিক থেকে অক্টালে রূপান্তরের ক্ষেত্রে, বাইনারিতে যে পদ্ধতিতে রূপান্তর করেছি, এখানেও একই নিয়ম। শুধু পূর্ণ দশমিক এর ক্ষেত্রে ৮ দিয়ে ভাগ করতে হবে। আর ভগ্নাংশ দশমিক এর ক্ষেত্রে ৮ দিয়ে গুণ করতে হবে। ফলাফল লেখার নিয়মটাও একই।
এখানে (৯২৮.১২)১০ সংখ্যাটির অক্টাল মান হচ্ছে (১৬৪০.০৭৫৩৪১….)৮।
দশমিক সংখ্যা থেকে হেক্সাডেসিমাল সংখ্যায় রূপান্তরঃ
দশমিক থেকে হেক্সাডেসিমালে রূপান্তর করার প্রক্রিয়াও একই। এখানে পূর্ণ দশমিক এর ক্ষেত্রে ১৬ দিয়ে ভাগ করতে হবে। আর ভগ্নাংশ দশমিক এর ক্ষেত্রে ১৬ দিয়ে গুণ করতে হবে। ফলাফল লেখার নিয়মটাও একই।
তবে এক্ষত্রে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। ভাগশেষের কিংবা গুণের ক্ষেত্রে পূর্ণঅংশের মান কিন্তু এই রকম ১০, ১৫, ১৪ আসতে পারে। লক্ষ্য কর এই ১০ কিংবা ১৫ কিন্তু কোন ইউনিক ডিজিট না। ১ ও ০ ডিজিটের সমন্বয়ে তৈরী হয়েছে ১০। সুতরাং এভাবে লিখা যাবে না। নিচের চার্ট অনুযায়ী ইংরেজি বর্ণমালার লেটার বসাতে হবে। অর্থাৎ ১০ এর পরিবর্তে এর ইকোইভিলেন্ট A বসাতে হবে।
সুতরাং, (২৪৭৯.২৩)১০ সংখ্যাটির হেক্সাডেসিমাল মান হচ্ছে (৯AF.৩AE১৪৭….)১৬।
ত এই ছিল আজকের লেকচারে। আশা করি তোমারা বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছ। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট বক্স এর মাধ্যমে তা করতে পার। সবাইকে অনুরোধ করব, কয়েকবার করে লেখাটা আস্তে আস্তে মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করবে এবং বইয়ের অনুশীলনী থেকে প্রচুর প্র্যাকটিস করবে। এতে করে বিষয়গুলো ভালোমত বুঝা যায়।
No comments